প্রকাশিত: ১১/০৩/২০২২ ৯:৪৪ এএম


কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গৃহহীন ৫৫০ পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত শরণার্থীদের কেউ কেউ তাঁবু বরাদ্দ পাচ্ছেন। কোনো কোনো পরিবারকে নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে ঘর।

জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় এ তাঁবু ও স্থায়ী ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়।

উপজেলার পশ্চিম বালুখালী এলাকার ক্যাম্প-৫ আশ্রয়শিবিরের ৪টি ব্লকে গত মঙ্গলবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫৫৩টি ঘর সম্পূর্ণ ও আংশিকভাবে পুড়ে যায়। এ সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে তিন বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত হয় অন্তত ২০ রোহিঙ্গা নারী ও শিশু।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৬০ পরিবারকে তাঁবু ও ৪০ পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবার পাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই। এর আগপর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে দুপুর ও রাতে রান্না করা গরম খাবার ও খাওয়ার পানি সরবরাহ করা হবে। এর পর থেকে তাঁদের ঘরে রান্না করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।

আজ বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপের ওপর ঘরবাড়ির নির্মাণ কাজ চালাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। পাহাড়ের ঢালুতে গড়া হয়েছিল শরণার্থী ক্যাম্পটি। এখন ঢালু কেটে সমান করে তাতে সারিবদ্ধভাবে বসতি নির্মাণ করা হচ্ছে। কিছু স্থানে সারিবদ্ধভাবে তাঁবু বসানো হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের কয়েক শ গজ দূরে ৩০-৪০টি রোহিঙ্গা পরিবার খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।

আজ দুপুরে একটি তাঁবু বরাদ্দ পেয়েছেন তৈয়বা খাতুন (৪৫) নামের একটি রোহিঙ্গা নারী। সঙ্গে তাঁর সাত ছেলেমেয়ে। ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা যান তৈয়বার স্বামী আবদুল করিম। এরপর তিনি সাত সন্তান নিয়ে বাংলাদেশ পালিয়ে আসেন। ঠাঁই হয় বালুখালী (ক্যাম্প-৫) আশ্রয়শিবিরের ডি-ব্লকে। মঙ্গলবারের অগ্নিকাণ্ডে তাঁর ঘরটিও পুড়ে যায়।

তৈয়বা খাতুন বলেন, তাঁর এক ছেলে ক্যাম্প-৫–এর পাশের একটি মাদ্রাসার হেফজখানায় পড়ছে। আগামী সপ্তাহে তাকে পাগড়ি (পরিপূর্ণ কোরআনে হাফেজের স্বীকৃতি) দেওয়ার কথা ছিল। তাই ছেলের জন্য নতুন পাঞ্জাবি ও কাপড় কিনে এনেছিলেন তিনি। আগুনে ৩৫ হাজার টাকার সঙ্গে সেই কাপড়ও পুড়ে গেছে।

মঙ্গলবার বিকেলের প্রায় ২ ঘণ্টার আগুনে ৪৬০টি রোহিঙ্গা বসতি সম্পূর্ণ এবং বাকিগুলো আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর বাইরে আরও তিনটি মক্তব, তিনটি মসজিদ, ছয়টি এনজিও স্কুল ও একটি ফিল্ড হাসপাতাল পুড়ে যায়। বি-ব্লকের মোছরাবাজার এলাকার পাহাড়ের ঢালুর একটি রোহিঙ্গা বাড়ির রান্নাঘরের গ্যাসের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বলে জানা গেছে।

রোহিঙ্গা নেতা আবুল কাশেম (৫৬) বলেন, পাহাড়ের ঢালুতে বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে একটার সঙ্গে আরেকটা লাগিয়ে রোহিঙ্গাদের শেডঘর তৈরি হয়েছে। একটি শেডে ৩০-৮০টি পর্যন্ত রোহিঙ্গা পরিবার থাকে। চলতি বছরের গত ২ মাসে ৬ দফার অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১২ হাজার রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে গেছে। প্রথমআলো

পাঠকের মতামত

গোল্ড কাপ ফাইনালে টিকিট কেলেঙ্কারি, মাঠে দর্শকদের বিক্ষোভ ও বিশৃঙ্খলা

জেলা প্রশাসক গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। শুক্রবার ...

উখিয়ায় বাল্যবিবাহ বন্ধে শিশু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত

উখিয়ায় বাল্য বিবাহের হার কমিয়ে আনতে শিশু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন বিষয়ক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ...

বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল হক চেয়ারম্যানের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন

রামু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল হক-এর দাফন সম্পন্ন হয়েছে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়। ...